ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার বা দূর করার উপায়

ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার বা দূর করার উপায়

আপনার মনে হচ্ছে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসা বা দূর করা কঠিন, কিন্তু কিছু সহজ উপায় আছে যা আপনাকে সাহায্য করতে পারে। প্রথমেই মনে রাখবেন, আপনি একা নন। অনেক মানুষ ডিপ্রেশনের সাথে লড়াই করেন এবং এর থেকে মুক্তি পান। ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের প্রতি খেয়াল রাখা। ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে শুরু করুন। যেমন, প্রতিদিন কিছুটা সময় হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন। সূর্যের আলোতে থাকা মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। পুষ্টিকর খাবার খান এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। আপনার পছন্দের কাজগুলো করার চেষ্টা করুন, যেমন গান শোনা, বই পড়া বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো। এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার মনকে অনেকটাই হালকা করতে পারে।

যদি দেখেন যে আপনার একার পক্ষে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে পেশাদার সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না। একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্ট আপনাকে সঠিক পথ দেখাতে পারবেন। তারা আপনার সমস্যা শুনে উপযুক্ত পরামর্শ এবং চিকিৎসা দিতে পারবেন। এছাড়াও, আপনার বিশ্বস্ত বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সাথে আপনার অনুভূতিগুলো ভাগ করে নিতে পারেন। তাদের সমর্থন আপনার জন্য অনেক বড় শক্তি হতে পারে। মনে রাখবেন, ডিপ্রেশন একটি রোগ, এবং সঠিক চিকিৎসা ও যত্নে এটি সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। ধৈর্য ধরুন এবং নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। আপনি অবশ্যই এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।

ডিপ্রেশন কি এবং কেন হয় ঠিকমতো জেনে নিন

ডিপ্রেশন কেন দূর করা দরকার

ডিপ্রেশন কেন দূর করা দরকার?

ডিপ্রেশন শুধু মন খারাপ নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অসুস্থতা। ডিপ্রেশন থাকলে আমাদের কোনো কাজে মন বসে না, কিছু করতে ইচ্ছা করে না। এর ফলে আমাদের ব্যক্তিগত জীবন, পরিবারিক সম্পর্ক, কাজ ও পড়াশোনা সব নষ্ট হয়ে যায়। ডিপ্রেশন মানুষকে একা করে দেয়, বন্ধুরা দূরে সরে যায়। এতে হতাশা আরও বাড়ে এবং ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলো ভেঙে যায়।

ডিপ্রেশন শুধু মনের নয়, শরীরেরও ক্ষতি করে। ঘুম ঠিকমতো হয় না, খাওয়া-দাওয়ায় সমস্যা হয়। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, মাথা বা শরীর ব্যথা করে। ডিপ্রেশন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে ঘন ঘন অসুস্থ হই। এমনকি হৃদরোগের মতো বড় অসুখও হতে পারে। তাই, সুস্থ ও ভালো থাকতে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসা খুব দরকার।

নিজের সমস্যা বুঝে নেওয়া

প্রথমেই আমাদের নিজেদের সমস্যাগুলো বুঝতে শিখতে হবে। যখন মন খারাপ থাকে, তখন সেটাকে লুকিয়ে না রেখে স্বীকার করা খুব জরুরি। মন খারাপ লাগলে সেটাকে মেনে নিন, অস্বীকার করবেন না। এরপর ভাবুন কেন আপনার মন খারাপ লাগছে। কী কারণে এমন অনুভূতি হচ্ছে, সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। হতে পারে কোনো ঘটনা, কোনো কথা, বা কোনো চাপ এর পেছনে কাজ করছে।

নিজের ভেতরের এই অনুভূতিগুলোকে যখন আপনি চিনতে পারবেন, তখনই সমাধানের প্রথম ধাপ শুরু হবে। কারণ যখন আপনি বুঝতে পারবেন যে কী আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, তখনই আপনি সেটার মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন। তাই মন খারাপ হলে নিজেকে একটু সময় দিন, নিজের অনুভূতিগুলো নিয়ে ভাবুন এবং কারণটা বোঝার চেষ্টা করুন।

ডিপ্রেশনের প্রাথমিক লক্ষণ এই পোস্ট থেকে জানুন

বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া

বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে নিন

আমাদের জীবনে এমন অনেক সময় আসে যখন নিজেদের সমস্যাগুলো সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। তখন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া খুবই জরুরি। যেমন, যদি আপনার শারীরিক কোনো ব্যথা বা সমস্যা থাকে যা আপনাকে মানসিকভাবেও প্রভাবিত করছে, তাহলে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে কথা বলতে পারেন। তারা আপনাকে সঠিক ব্যায়াম বা থেরাপির মাধ্যমে শারীরিক কষ্ট কমাতে সাহায্য করবেন, যা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নিজের শরীরের যত্ন নিলে মনও ভালো থাকে।

তবে, মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলো শারীরিক সমস্যার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমরা নিজেদের অনুভূতিগুলোকে গুছিয়ে উঠতে পারি না বা কেন মন খারাপ লাগছে সেটা বুঝতে পারি না। এই পরিস্থিতিতে কাউন্সেলিং বা থেরাপি নেওয়া ভীষণ কার্যকর। একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বললে আপনি আপনার ভেতরের কষ্টগুলো ভাগ করে নিতে পারবেন। তারা আপনাকে সমস্যাগুলো চিনতে এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবেন। থেরাপি মানেই যে আপনি মানসিকভাবে অসুস্থ, এমনটা নয়; বরং এটা নিজেকে আরও ভালোভাবে জানার এবং মানসিক চাপ সামলানোর একটা সুযোগ।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যদি আপনার খুব বেশি খারাপ লাগে, নিজেকে অসহায় মনে হয় বা কোনো বিপদে পড়েন, তাহলে দ্রুত সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না। এটা আপনার দুর্বলতা নয়, বরং আপনার বিচক্ষণতার পরিচয়। বন্ধু, পরিবার, শিক্ষক অথবা যেকোনো বিশ্বস্ত মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে পারেন। প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বরে ফোন করুন বা নিকটস্থ হাসপাতাল বা মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন। মনে রাখবেন, একা একা সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নাও হতে পারে, আর সাহায্য চাওয়াটা সাহসের কাজ।

পরিবার ও বন্ধুদের পাশে রাখা

যখন আমাদের মন খারাপ থাকে বা কোনো সমস্যায় ভুগি, তখন পরিবার ও বন্ধুদের পাশে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ে একা থাকাটা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। আপনার পরিবারের সদস্য বা কাছের বন্ধুদের সঙ্গে মন খুলে কথা বলা উচিত। তাদের কাছে আপনার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করুন, কী নিয়ে কষ্ট পাচ্ছেন সেটা বলুন। এতে দেখবেন মনের ওপর থেকে একটা বড় বোঝা নেমে গেছে। তারা হয়তো আপনার সমস্যা পুরোপুরি সমাধান করতে পারবেন না, কিন্তু তাদের সহানুভূতি এবং সমর্থন আপনাকে মানসিকভাবে অনেকটা শক্তি দেবে।

একাকীত্ব আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই মন খারাপ লাগলে একা না থেকে সবার সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন, পরিবারের সঙ্গে খাবার খান বা ছোটখাটো কোনো কাজে অংশ নিন। একসঙ্গে সময় কাটালে মন হালকা হয়, নতুন করে ভাবতে শেখা যায়। এমনকি সামান্য একসঙ্গে হাসাহাসিও মনকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে। এই সময়গুলোতে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি একা নন, আপনার পাশে দাঁড়ানোর জন্য মানুষ আছে।

তাদের কাছ থেকে সাহায্য ও সমর্থন নেওয়াটা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং বিচক্ষণতার পরিচয়। তারা হয়তো আপনাকে বাস্তবসম্মত কোনো পরামর্শ দিতে পারেন, অথবা শুধু আপনার কথা শুনে আপনাকে সান্ত্বনা দিতে পারেন। তাদের উপস্থিতি আপনাকে মানসিক শক্তি যোগাবে এবং আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার প্রতি তাদের ভালোবাসা আছে। বিপদের সময় প্রিয়জনদের পাশে পাওয়াটা আসলে সবচেয়ে বড় শক্তি। তাই নিজের কষ্টগুলো লুকিয়ে না রেখে তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিন।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন

বিষণ্নতা বা মন খারাপের সময় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চলা খুব জরুরি। কারণ আমাদের শরীর আর মনের স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রথমেই আসে নিয়মিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি বা ফাস্ট ফুড পরিহার করে তাজা ফলমূল, শাকসবজি, শস্য এবং পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করুন। সঠিক পুষ্টি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে। মনে রাখবেন, শরীরকে সুস্থ রাখলে মনও সতেজ থাকে।

এরপর আসে ঠিকমতো ঘুমানো। ঘুমের অভাব মানসিক চাপ বাড়ায় এবং বিষণ্নতাকে আরও গভীর করে তোলে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা মানসম্মত ঘুম নিশ্চিত করুন। ঘুমানোর একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী মেনে চলুন এবং ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এছাড়া, প্রতিদিন কিছু ব্যায়াম বা হাঁটা-চলা করা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি শরীরের এন্ডোরফিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা প্রাকৃতিক মুড লিফটার হিসেবে কাজ করে।

এমনকি প্রতিদিন ৩০ মিনিটের হালকা হাঁটাও আপনার মনকে সতেজ করে তুলতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং ভালো ঘুম আনতে সাহায্য করে, যা বিষণ্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডিপ্রেশনের প্রধান ৮টি মারাত্মক লক্ষণ কি কি তা বিস্তারিত জানুন

নিজের মানসিক যত্ন নেওয়া

নিজের মানসিক যত্ন নেওয়া

বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের যত্ন নেওয়াটা খুবই দরকারি। কীভাবে নিজের যত্ন নেবেন? চলুন কিছু সহজ কথা বলি।

মনকে শান্ত রাখুন

যখন মন খারাপ থাকে, তখন হাজারো নেতিবাচক চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খায়। এই সময় মনকে শান্ত রাখাটা খুব জরুরি। এর জন্য কিছু সহজ উপায় আছে:

  • ধ্যান বা মেডিটেশন: প্রতিদিন কিছুক্ষণ চুপচাপ চোখ বন্ধ করে বসুন। শুধু নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিন। দেখবেন মনটা আস্তে আস্তে শান্ত হয়ে আসছে।
  • যোগব্যায়াম: যোগাসন শুধু শরীরকে ভালো রাখে না, মনকেও শান্তি দেয়। কিছু সহজ যোগাসন নিয়মিত করলে মানসিক চাপ কমে যায়।
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম: মন অস্থির লাগলে লম্বা করে শ্বাস নিন, তারপর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এটা আপনার মনকে বর্তমানের দিকে নিয়ে আসবে এবং খারাপ চিন্তাগুলোকে দূরে ঠেলে দেবে।

এই ব্যায়ামগুলো প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য হলেও করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে এবং আপনি আরও শান্ত বোধ করছেন।

ভালো চিন্তা করুন ও পছন্দের কাজ করুন

মন খারাপ থাকলে ভালো কিছু ভাবাটা কঠিন, তাই না? কিন্তু চেষ্টা করাটা জরুরি।

  • ভালো দিকগুলো দেখুন: যখন মন খারাপ থাকে, তখন সচেতনভাবে ভালো বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন। ছোট ছোট সাফল্যের জন্য নিজেকে একটু বাহবা দিন। সুন্দর স্মৃতিগুলো মনে করুন। প্রথম দিকে হয়তো কঠিন লাগবে, কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে যান।
  • পছন্দের কাজে সময় দিন: নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করুন। বই পড়ুন, গান শুনুন, ছবি আঁকুন, বাগান করুন বা অন্য কোনো সৃষ্টিশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই কাজগুলো আপনার মনকে আনন্দ দেবে এবং বিষণ্নতার অনুভূতি থেকে আপনাকে দূরে রাখবে। নিজের জন্য সময় বের করা এবং নিজের ভালো লাগার কাজগুলো করা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি।

মনে রাখবেন, নিজের যত্ন নেওয়াটা কোনো বিলাসিতা নয়, বরং সুস্থ আর ভালো থাকার জন্য এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

প্রযুক্তি ও অনলাইনের সাহায্য নেওয়া

অনেক সময় যখন মন খারাপ থাকে, তখন মনে হয় সব একা একা সামলাতে হবে। কিন্তু জানেন কি, আমাদের হাতের কাছের প্রযুক্তিও আমাদের বন্ধু হতে পারে?

  • অনলাইনে একটু খোঁজখবর নিন: আজকাল মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনলাইনে প্রচুর ভালো তথ্য পাওয়া যায়। যখন মনটা ভীষণ খারাপ থাকে, তখন একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখুন। দেখবেন, আপনি একা নন, আরও অনেকেই এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এটা জানলে আপনার মনে অনেকটা শান্তি আসবে, ভরসাও পাবেন।
  • অ্যাপ ব্যবহার করুন বা দলে ভিড়ে যান: এখন মোবাইলে এমন অনেক দারুণ অ্যাপ আছে যা আপনাকে শান্ত থাকতে শেখাবে, এমনকি মনকে ভালো দিকে নিয়ে যেতেও সাহায্য করবে। আর যদি খুব একা লাগে, তাহলে অনলাইনে কিছু সাপোর্ট গ্রুপ আছে, যেখানে আপনার মতো মানুষজন নিজেদের কষ্টগুলো ভাগ করে নেন। সেখানে যোগ দিলে দেখবেন, মনটা অনেক হালকা লাগছে আর মনে জোর পাচ্ছেন।

প্রতিদিন ছোট ছোট ভালো কাজ করা

প্রতিদিন ছোট ছোট ভালো কাজ করা

একবারে অনেক বড় কিছু করতে গেলে মনটা আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে। তার চেয়ে বরং ছোট ছোট জিনিসে মন দিন।

  • নিজের জন্য ছোট ছোট কাজ ঠিক করুন: প্রতিদিনের জন্য ছোট্ট কিছু কাজের একটা তালিকা বানিয়ে ফেলুন। যেমন, আজ একটা বইয়ের কয়েক পাতা পড়বেন, বা maybe দশ মিনিটের জন্য বাইরে হাঁটতে যাবেন। খুব বেশি কিছু না, ছোট ছোট কাজ।
  • নিজের সাফল্যকে গুরুত্ব দিন: যখন একটা ছোট কাজ শেষ হবে, তখন নিজেকে একটু বাহবা দিন। “আরে বাহ! আমি এটা পেরেছি!” – এই ভাবনাটাই খুব দরকারি। দেখবেন, এই ছোট ছোট জয়গুলো আপনাকে আরও বড় কিছুর দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে। মনে রাখবেন, সমুদ্রও কিন্তু ছোট ছোট ঢেউ মিলেই তৈরি হয়।

খারাপ অভ্যাস এড়ানো

বিষণ্নতা বা ডিপ্রেশন থেকে ভালো হতে চাইলে খারাপ অভ্যাসগুলো এড়ানো খুব দরকার। যেমন, মাদক, অ্যালকোহল বা ধূমপান—এসব জিনিস থেকে দূরে থাকুন। অনেক সময় মনে হয় এগুলো নিলে মন ভালো হবে, কিন্তু আসলে এগুলো শরীর ও মনের জন্য খারাপ। এগুলো ডিপ্রেশন আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এসব ছেড়ে দিলে আপনি আরও ভালো ও সতেজ বোধ করবেন।

এছাড়া, খারাপ পরিবেশ বা খারাপ মানুষের কাছ থেকেও দূরে থাকুন। যাদের কথা বা ব্যবহার আপনার মন খারাপ করে দেয়, তাদের এড়িয়ে চলুন। নেতিবাচক কথা বা সমালোচনা শুনলে মন আরও খারাপ হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব ভালো ও ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে থাকুন এবং এমন পরিবেশে থাকুন যেখানে আপনি শান্তি পান। নিজের ভালো থাকার জন্য এসব পরিবর্তন খুবই জরুরি।

শেষ কথা

ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু এটা মনে রাখা খুব জরুরি যে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। হয়তো পথটা সহজ নয়, কিন্তু সঠিক চেষ্টা আর ধৈর্যের মাধ্যমে আপনি ঠিকই এই অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরতে পারবেন। তাই আশা হারাবেন না, কারণ এই লড়াইয়ে আপনি একা নন।

এই যাত্রায় নিজের প্রতি ধৈর্য রাখুন এবং নিজেকে ভালোবাসুন। আপনার মন হয়তো অস্থির থাকবে, নিজেকে দোষী মনে হতে পারে—কিন্তু মনে রাখবেন, আপনি একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। নিজেকে সুস্থ করে তোলার জন্য সময় দিন। ছোট ছোট উন্নতিগুলোকে গুরুত্ব দিন এবং নিজের প্রতি কঠোর না হয়ে সহানুভূতিশীল হন। নিজের যত্ন নেওয়াটা এই সময়ে খুব জরুরি।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সাহায্য চাইতে কখনোই লজ্জাবোধ করবেন না। বন্ধু, পরিবার, বা কোনো পেশাদার চিকিৎসক—যার কাছেই হোক, আপনার অনুভূতিগুলো খুলে বলুন। মনের কষ্ট চেপে রাখলে তা আরও বাড়ে। মনে রাখবেন, সাহায্য চাওয়াটা দুর্বলতার লক্ষণ নয়, বরং এটি আপনার সুস্থ হওয়ার পথে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ। সঠিক সাহায্য আপনাকে ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে এবং জীবনকে নতুন করে উপভোগ করার সুযোগ দেবে।

যেকোনো রকমের পরামর্শ পেতে – 01760-636324 (সকাল ৯.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা) এই নম্বরে কল করুন এবং এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিন।

আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ নিউরোফিট

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top