স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি কি?
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি (SCI) হলো আমাদের মেরুদণ্ডের ভেতরে থাকা স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগা বা এর ক্ষতি হওয়া। স্পাইনাল কর্ড হলো একগুচ্ছ স্নায়ু, যা আমাদের মস্তিষ্ক থেকে শরীরের বাকি অংশে বার্তা পাঠায় এবং শরীর থেকে মস্তিষ্কে বার্তা নিয়ে যায়। যখন এই স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগে, তখন এই বার্তার আদান-প্রদান ব্যাহত হয়। এর ফলে আঘাতের মাত্রার ওপর নির্ভর করে শরীরের বিভিন্ন অংশে অনুভূতি (যেমন – স্পর্শ, ব্যথা, তাপমাত্রা অনুভব করা) এবং নড়াচড়ার ক্ষমতা কমে যায় বা সম্পূর্ণ হারিয়ে যায়। এই আঘাতের কারণ হতে পারে কোনো দুর্ঘটনা, যেমন – গাড়ি দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া, খেলাধুলার সময় আঘাত পাওয়া, অথবা সহিংসতা।
আঘাতের স্থান এবং তীব্রতার ওপর নির্ভর করে স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির লক্ষণগুলো ভিন্ন হতে পারে। যেমন, ঘাড়ের দিকে আঘাত লাগলে হাত, পা এবং শরীরের নিচের অংশে দুর্বলতা বা পক্ষাঘাত দেখা দিতে পারে, যাকে কোয়াড্রিপ্লেজিয়া বলা হয়। আবার, পিঠের নিচের দিকে আঘাত লাগলে শুধুমাত্র পা এবং শরীরের নিচের অংশে প্রভাব পড়তে পারে, যাকে প্যারা প্লেজিয়া বলা হয়। এই ইনজুরি কেবল শারীরিক গতিশীলতাকেই প্রভাবিত করে না, এটি মূত্রাশয় এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা, শ্বাস-প্রশ্বাস, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকেও প্রভাবিত করতে পারে, যা রোগীর দৈনন্দিন জীবনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে।
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির কোনো পুরোপুরি নিরাময় নেই, তবে আধুনিক চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে জরুরি চিকিৎসা, সার্জারি, ফিজিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়ক সরঞ্জাম ব্যবহার। এই চিকিৎসাগুলোর মূল লক্ষ্য হলো বাকি থাকা কার্যকারিতা বাড়ানো, জটিলতা কমানো এবং রোগীকে যতটা সম্ভব স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করা। স্পাইনাল কর্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ধারাবাহিক যত্ন এবং সামাজিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি কেন হয়? (কারণ)
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এই কারণগুলোকে আমরা প্রধানত দুটি বড় ভাগে ভাগ করতে পারি: ১. আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণ এবং ২. রোগ বা অসুস্থতাজনিত কারণ, যা ধীরে ধীরে স্পাইনাল কর্ডকে প্রভাবিত করে।
আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণগুলো সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এবং এগুলি সাধারণত অপ্রত্যাশিত ঘটনার মধ্য দিয়ে ঘটে:
- যানবাহন দুর্ঘটনা: এটি স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির অন্যতম প্রধান কারণ। যখন গাড়ি, মোটরসাইকেল বা সাইকেল দুর্ঘটনায় আকস্মিকভাবে এবং খুব জোরে আঘাত লাগে, তখন আমাদের মেরুদণ্ডের হাড়গুলো ভেঙে যেতে পারে বা তাদের স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরে যেতে পারে। এই ভাঙা হাড় বা স্থানচ্যুত অংশগুলো সরাসরি স্পাইনাল কর্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে এটিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে মস্তিষ্কের নির্দেশাবলী স্নায়ুর মাধ্যমে শরীরের বাকি অংশে পৌঁছাতে পারে না, এবং শরীর কার্যক্ষমতা হারায়।
- পড়ে যাওয়া: উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়া স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির একটি সাধারণ কারণ, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড় দুর্বল হয়ে যায় (যেমন অস্টিওপরোসিস), তাই সামান্য পড়ে যাওয়াতেও মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত লাগতে পারে। সিঁড়ি থেকে পিছলে যাওয়া বা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়াও এই ধরনের ইনজুরির কারণ হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রেও উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যাওয়া, যেমন – খেলার সময় বা আসবাবপত্র থেকে পড়ে যাওয়া স্পাইনাল কর্ডের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- খেলাধুলার আঘাত: খেলাধুলা, বিশেষ করে যেখানে দ্রুত গতি, সংঘর্ষ বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে (যেমন ফুটবল, রাগবি, জিমন্যাস্টিকস, স্কিইং বা সাইক্লিং), সেখানে স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে। অপ্রত্যাশিতভাবে মাটিতে পড়ে যাওয়া বা অন্য খেলোয়াড়ের সাথে সংঘর্ষে মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড চাপ পড়তে পারে। এছাড়াও, অগভীর জলে ডাইভিং করার সময় অসাবধানতাবশত মাথার ভরে ঝাঁপ দিলে ঘাড়ের মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত লেগে স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- সহিংসতা: দুর্ভাগ্যবশত, সহিংস ঘটনাও স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির কারণ হতে পারে। গুলিবিদ্ধ হওয়া বা ছুরিকাঘাতের মতো ঘটনায় স্পাইনাল কর্ডে সরাসরি আঘাত লাগতে পারে, যা তাৎক্ষণিকভাবে স্নায়ুগুলির কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয় এবং শরীরের সংশ্লিষ্ট অংশে পক্ষাঘাত সৃষ্টি করতে পারে।
এই ধরনের আঘাতের ফলে প্রায়শই মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় (ফ্র্যাকচার) অথবা স্থানচ্যুত হয় (ডিসলোকেশন)। মেরুদণ্ড ছোট ছোট হাড়ের টুকরা দিয়ে গঠিত, যাদেরকে কশেরুকা (vertebra) বলা হয়। যখন একটি কশেরুকা ভেঙে যায় বা তার সঠিক অবস্থান থেকে সরে যায়, তখন সেটি মেরুদণ্ডের ভেতরে থাকা স্পাইনাল কর্ডের উপর সরাসরি চাপ সৃষ্টি করে। এই চাপের কারণে স্নায়ু সংকেতগুলো সঠিকভাবে যাতায়াত করতে পারে না, যার ফলে স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি ঘটে।
রোগ বা অসুস্থতাজনিত কারণগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে স্পাইনাল কর্ডকে প্রভাবিত করে এবং সময় নিয়ে এই ইনজুরি প্রকাশ পায়:
- দীর্ঘমেয়াদী রোগ: কিছু নির্দিষ্ট রোগ স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির ঝুঁকি বাড়ায়। উদাহরণস্বরূপ, ক্যান্সার যখন মেরুদণ্ডের হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে (যাকে মেটাস্ট্যাসিস বলে), তখন এই টিউমারগুলো স্পাইনাল কর্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আর্থ্রাইটিস (বিশেষ করে মেরুদণ্ডের জয়েন্টগুলোতে বাত) বা অস্টিওপরোসিস (হাড় ক্ষয় রোগ, যেখানে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়) মেরুদণ্ডের হাড়কে দুর্বল বা বিকৃত করে তুলতে পারে, যার ফলে স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও, কিছু প্রদাহজনিত রোগ স্পাইনাল কর্ডের চারপাশে ফোলাভাব সৃষ্টি করে এবং চাপ দিতে পারে।
- মেরুদণ্ডের চারপাশে রক্তপাত বা ফোলা হওয়া: কখনও কখনও স্পাইনাল কর্ডের চারপাশে অস্বাভাবিক রক্তনালীর ত্রুটি (যেমন অ্যানিউরিজম) থেকে রক্তপাত হতে পারে, অথবা কোনো ছোট আঘাতের কারণে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। এই রক্তপাত বা তীব্র প্রদাহের কারণে সৃষ্ট ফোলা স্পাইনাল কর্ডের উপর অস্বাভাবিক চাপ ফেলে এবং এর ফলে স্নায়ুকোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
- সংক্রমণ: মেরুদণ্ড বা স্পাইনাল কর্ডে যদি ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে কোনো সংক্রমণ হয়, তাহলে সেখানে তীব্র প্রদাহ এবং টিস্যুর ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে স্পাইনাল কর্ডের স্বাভাবিক কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। যেমন – মেরুদণ্ডের অ্যাবসেস (ফোড়া) বা টিবি রোগের কারণে স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- ডিস্কের সমস্যা: আমাদের মেরুদণ্ডের প্রতিটি কশেরুকার মাঝখানে নরম, জেলির মতো কুশন থাকে, যাদেরকে ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক বলা হয়। এই ডিস্কগুলো আমাদের মেরুদণ্ডকে নমনীয় রাখতে এবং চাপ শোষণ করতে সাহায্য করে। যখন এই ডিস্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যেমন – ডিস্ক হার্নিয়েশন (যখন ডিস্ক তার স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরে গিয়ে স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করে), তখন এটি স্পাইনাল কর্ড বা স্পাইনাল স্নায়ুগুলির উপর সরাসরি চাপ ফেলে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট অংশে সংবেদনশীলতা কমে যাওয়া, অসাড়তা, ব্যথা বা চলাফেরার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই সমস্ত কারণগুলোর ফলে স্পাইনাল কর্ডে রক্ত সরবরাহ কমে যেতে পারে, স্নায়ুকোষগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, অথবা মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য অংশের মধ্যে স্নায়ু সংকেত পরিবহনের পথগুলো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। এই জটিল প্রক্রিয়াগুলোর চূড়ান্ত পরিণতি হলো স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি, যা একজন ব্যক্তির জীবনকে আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে।
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি এর লক্ষণ
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি (SCI) হলে রোগীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যা আঘাতের স্থান এবং ক্ষতির তীব্রতার ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল। এই লক্ষণগুলো খুব সূক্ষ্ম থেকে শুরু করে অত্যন্ত গুরুতর হতে পারে এবং এগুলিকে সাধারণত তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়, যা শরীরের বিভিন্ন কার্যকারিতাকে নির্দেশ করে:
১. অনিচ্ছাকৃত লক্ষণ (Autonomic Symptoms)
আমাদের শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হজম প্রক্রিয়া, এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ—এগুলো আমাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না; বরং এগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই প্রক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করে যে স্নায়ুতন্ত্র, তাকে অনিচ্ছাকৃত স্নায়ুতন্ত্র বলে। স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি হলে এই স্বয়ংক্রিয় কাজগুলো ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে নিম্নলিখিত জটিল লক্ষণগুলো দেখা যায়:
- শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা: ইনজুরির কারণে শরীর তার অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফলে রোগী হঠাৎ করে অত্যধিক গরম অনুভব করতে পারে (যেমন – গরমেও ঘেমে না যাওয়া) বা কোনো কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগতে পারে। এই সমস্যা সাধারণত আঘাতের স্তরের নিচের অংশে বেশি দেখা যায়, যেখানে স্নায়ুগুলো শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বার্তা মস্তিষ্কে পাঠাতে পারে না।
- রক্তচাপের পরিবর্তন: রক্তচাপ হঠাৎ করে খুব কমে যেতে পারে (যা হাইপোটেনশন নামে পরিচিত), বিশেষ করে যখন রোগী বসা থেকে দাঁড়ায়। আবার, কিছু ক্ষেত্রে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যেতে পারে (যা অটোনমিক ডিসরিফ্লেক্সিয়া নামে পরিচিত)। এটি একটি অত্যন্ত জরুরি অবস্থা হতে পারে, যা জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
- ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (পুরুষদের ক্ষেত্রে) এবং যৌন ক্রিয়ায় সমস্যা: স্পাইনাল কর্ডের ক্ষতির কারণে পুরুষ ও মহিলাদের যৌন ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (লিঙ্গ উত্থানে অক্ষমতা) একটি সাধারণ সমস্যা। মহিলাদের ক্ষেত্রেও যৌন অনুভূতি এবং কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে।
- মূত্রাশয় এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ হারানো: প্রস্রাব বা মলত্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ কমে যেতে পারে বা সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতে পারে। এর ফলে রোগী মূত্র বা মল ধরে রাখতে অক্ষম হয় (অসংযম) অথবা প্রস্রাব বা মলত্যাগে প্রচণ্ড অসুবিধা হয় (ধারণক্ষমতা কমে যাওয়া)। এই সমস্যা রোগীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করে এবং বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক জটিলতা সৃষ্টি করে।
- শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা: যদি ঘাড়ের উঁচু অংশে স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগে, তাহলে শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়ক পেশীগুলো দুর্বল হয়ে যেতে পারে বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের (ভেন্টিলেটর) প্রয়োজন হতে পারে।
২. মোটর লক্ষণ (Motor Symptoms)
মোটর লক্ষণগুলো মূলত শরীরের নড়াচড়ার ক্ষমতা বা পেশী-সংক্রান্ত সমস্যা নির্দেশ করে। স্পাইনাল কর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হলে মস্তিষ্ক থেকে পেশীগুলোতে সঠিকভাবে নির্দেশ পৌঁছাতে পারে না, যার ফলে পেশীগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে বা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না:
- দুর্বলতা: শরীরের এক বা একাধিক অংশে (যেমন – হাত, পা, ধড়, বা শরীরের একপাশ) পেশীর শক্তি কমে যায়। এই দুর্বলতা হালকা থেকে শুরু করে গুরুতর পক্ষাঘাত পর্যন্ত হতে পারে, যা রোগীর দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতাকে সীমিত করে দেয়।
- পেশীর স্পাস্টিসিটি: এটি একটি সাধারণ লক্ষণ, যেখানে পেশীগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে শক্ত হয়ে যায় বা খিঁচুনির মতো আচরণ করে। এই পেশী টানটান ভাব বা স্পাস্ম (অসাড়তা বা মোচড়) ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং নড়াচড়ায় মারাত্মকভাবে বাধা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি উপকারীও হতে পারে, যেমন দাঁড়িয়ে থাকার সময় শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করা, কিন্তু প্রায়শই এটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
- পক্ষাঘাত (Paralysis): এটি স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির সবচেয়ে পরিচিত এবং গুরুতর লক্ষণ। পক্ষাঘাত সম্পূর্ণ বা আংশিক হতে পারে। আঘাতের স্তরের নিচের অংশে নড়াচড়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণ হারিয়ে যেতে পারে। যদি ঘাড়ের দিকে (সার্ভাইকাল স্পাইন) আঘাত লাগে, তাহলে হাত ও পা দুটোই প্রভাবিত হতে পারে, যাকে কোয়াড্রিপ্লেজিয়া (বা টেট্রাপ্লেজিয়া) বলা হয়। আর যদি পিঠের নিচের দিকে (থোরাসিক বা লাম্বার স্পাইন) আঘাত লাগে, তাহলে শুধুমাত্র পা দুটি প্রভাবিত হতে পারে, যাকে প্যারা প্লেজিয়া বলা হয়।
৩. সংবেদনশীল লক্ষণ (Sensory Symptoms)
সংবেদনশীল লক্ষণগুলো শরীরের স্পর্শ, ব্যথা, তাপমাত্রা, চাপ বা কম্পন অনুভব করার ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। স্পাইনাল কর্ডের মাধ্যমেই এই অনুভূতিগুলো শরীর থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছায়। তাই এটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই সংবেদনশীলতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়:
- টিঙলিং (Tingling) বা ঝিনঝিন করা: শরীরের নির্দিষ্ট অংশে ঝিনঝিন করা বা পিন-নিডল (পিন ফোটার মতো) অনুভূতির মতো লাগতে পারে। এটি স্নায়ুর ক্ষতির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে।
- অসাড়তা (Numbness): আঘাতের স্তরের নিচের অংশে অনুভূতি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে হারিয়ে যেতে পারে। এর ফলে রোগী ঠান্ডা, গরম, ব্যথা বা এমনকি স্পর্শের মতো উদ্দীপনাও অনুভব করতে পারে না। এটি দৈনন্দিন জীবনে আঘাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, কারণ রোগী আঘাত বা চাপ অনুভব করতে পারে না।
- ব্যথা: স্নায়ুর ক্ষতির কারণে প্রচণ্ড নিউরোপ্যাথিক ব্যথা (স্নায়বিক ব্যথা) হতে পারে। এই ব্যথা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন – জ্বালাপোড়ার মতো ব্যথা, তীব্র তীক্ষ্ণ ব্যথা, বৈদ্যুতিক শকের মতো অনুভূতি, অথবা অসাড়তা এবং ব্যথার মিশ্র অনুভূতি। এই ব্যথা আঘাতের স্থানে বা আঘাতের নিচের অংশে অনুভব হতে পারে এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
- তাপমাত্রা ও চাপের অনুভূতি হ্রাস: রোগী গরম বা ঠান্ডার পার্থক্য বুঝতে পারে না, অথবা শরীরের উপর চাপ সঠিকভাবে অনুভব করতে পারে না, যা দীর্ঘমেয়াদী ত্বকের সমস্যা (যেমন প্রেসার সোর) সৃষ্টি করতে পারে।
এই লক্ষণগুলোর যেকোনোটি যদি হঠাৎ দেখা যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, কারণ স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি একটি জরুরি অবস্থা এবং এর সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য দ্রুত এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমানো সম্ভব হতে পারে।
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি এর প্রতিকার
১. তাৎক্ষণিক চিকিৎসা ও সঠিক ব্যবস্থাপনা
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির ক্ষেত্রে প্রাথমিক এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সবচেয়ে জরুরি। আঘাত লাগার সাথে সাথে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া এবং জরুরি চিকিৎসা শুরু করা উচিত। এই সময় চিকিৎসকদের প্রধান লক্ষ্য থাকে স্পাইনাল কর্ডের আরও ক্ষতি হওয়া রোধ করা এবং রোগীর অবস্থাকে স্থিতিশীল করা।
- মেরুদণ্ডকে স্থিতিশীল রাখা: আঘাত পাওয়ার পরপরই মেরুদণ্ডকে নড়াচড়া থেকে বিরত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীকে সাবধানে স্ট্রেচারে রেখে হাসপাতালে আনা হয়, যাতে মেরুদণ্ড আরও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। প্রয়োজনে ঘাড়ে বা মেরুদণ্ডে বিশেষ কলার বা ব্রেস ব্যবহার করা হয়।
- শ্বাসনালী ও শ্বাস-প্রশ্বাস সচল রাখা: যদি আঘাতের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়, তবে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র (ভেন্টিলেটর) ব্যবহার করে রোগীকে শ্বাস নিতে সাহায্য করা হয়।
- রক্তচাপ ও রক্তসঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ: চিকিৎসকরা রক্তচাপ এবং শরীরের অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় কাজগুলো স্বাভাবিক রাখতে ওষুধ বা অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করেন।
২. আঘাতের তীব্রতা ও অবস্থান অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির চিকিৎসা পদ্ধতি আঘাতের তীব্রতা (আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতি) এবং মেরুদণ্ডের কোন অংশে আঘাত লেগেছে (যেমন – ঘাড়, বুক বা কোমর) তার ওপর নির্ভর করে। চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষার (যেমন – এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই) মাধ্যমে ক্ষতির পরিমাণ ও অবস্থান নিরূপণ করেন।
- হালকা ইনজুরি: যদি স্পাইনাল কর্ডের ক্ষতি আংশিক হয়, তবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে ওষুধ ও ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
- গুরুতর ইনজুরি: যদি স্পাইনাল কর্ডের মারাত্মক ক্ষতি হয় বা মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে স্পাইনাল কর্ডে চাপ সৃষ্টি করে, তবে আরও জটিল চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
৩. শারীরিক পুনর্বাসন ও ফিজিওথেরাপি
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির পর শারীরিক পুনর্বাসন (রিহ্যাবিলিটেশন) এবং ফিজিওথেরাপি (Physiotherapy) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি চিকিৎসার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি রোগীকে নতুন করে চলাফেরা করতে, শক্তি ফিরে পেতে এবং দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো পুনরায় শিখতে সাহায্য করে।
- পেশী শক্তি বৃদ্ধি: ফিজিওথেরাপিস্টরা রোগীর অবশিষ্ট পেশী শক্তি বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন অনুশীলন করান।
- চলনশীলতা বজায় রাখা: জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে যাওয়া রোধ করতে এবং শরীরের নমনীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করেন।
- ভারসাম্য ও সমন্বয়: রোগীকে বসতে, দাঁড়াতে বা প্রয়োজন অনুসারে চলাফেরার ভারসাম্য বজায় রাখতে শেখানো হয়।
- জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: অকুপেশনাল থেরাপিস্টরা রোগীকে দৈনন্দিন কাজ, যেমন – খাওয়া, পোশাক পরা, ব্যক্তিগত যত্ন নেওয়া ইত্যাদি কাজে সহায়ক সরঞ্জাম ব্যবহার করে কীভাবে স্বাধীনভাবে বাঁচা যায়, তা শেখান। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় রোগী এবং তার পরিবারকে এই নতুন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করা হয়।
৪. অস্ত্রোপচার (Surgery)
কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। অস্ত্রোপচারের প্রধান উদ্দেশ্য হলো:
- মেরুদণ্ডকে স্থিতিশীল করা: যদি মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় বা স্থানচ্যুত হয় এবং স্পাইনাল কর্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে, তবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভাঙা হাড় ঠিক করা হয় বা স্থানচ্যুত হাড়কে তার সঠিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হয়। এর ফলে স্পাইনাল কর্ডের উপর থেকে চাপ কমে যায়।
- স্পাইনাল কর্ডকে মুক্ত করা: যদি কোনো রক্ত জমাট বাঁধা, টিউমার বা ডিস্ক স্পাইনাল কর্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে, তবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেগুলোকে অপসারণ করে স্পাইনাল কর্ডকে মুক্ত করা হয়।
- ভবিষ্যৎ ক্ষতি রোধ: অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মেরুদণ্ডে মেটাল রড বা স্ক্রু বসিয়ে মেরুদণ্ডকে মজবুত করা হতে পারে, যাতে ভবিষ্যতে আরও ক্ষতি না হয়।
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি এর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি মানে মেরুদণ্ডের রগ বা শিরদাঁড়ায় আঘাত লাগা। এই ধরনের আঘাত খুব গুরুতর হতে পারে। এর ফলে শরীরের কোনো অংশ দুর্বল হয়ে যেতে পারে, অবশ লাগতে পারে, এমনকি একেবারেই নাড়াচাড়া করা না-ও যেতে পারে, যাকে আমরা প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত বলি। এমন অবস্থায় রোগীর জীবন পুরো বদলে যায়।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে ফিজিওথেরাপি হলো সবচেয়ে দরকারি একটা চিকিৎসা। ফিজিওথেরাপির মূল কাজ হলো আঘাতের কারণে শরীরের যে অংশগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না, সেগুলোকে আবার সচল করে তোলা। এর মাধ্যমে রোগী আবার নিজের কাজ নিজে করতে পারে, চলাফেরা করতে পারে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে কী কী করা হয়?
স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির রোগীদের জন্য ফিজিওথেরাপিস্টরা অনেক রকম পদ্ধতি ব্যবহার করেন। রোগীর আঘাত কতটা গুরুতর, তার কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে – এগুলোর ওপর নির্ভর করে ফিজিওথেরাপির ধরণ ঠিক করা হয়। নিচে কিছু প্রধান পদ্ধতি আলোচনা করা হলো:
- নিয়মিত ব্যায়াম: ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর জন্য বিশেষ কিছু ব্যায়াম তৈরি করে দেন। এই ব্যায়ামগুলো পেশী শক্তিশালী করে, শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়। যেমন, হাত-পা নাড়ানোর ব্যায়াম, ওজন নিয়ে ব্যায়াম ইত্যাদি।
- পেশী টানানো বা স্ট্রেচিং: স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির পর অনেক সময় পেশী শক্ত হয়ে যায় বা খিঁচে ধরে, যাকে ‘স্প্যাস্টিসিটি’ বলে। এতে নড়াচড়া করতে কষ্ট হয়। নিয়মিত পেশী টানানোর (স্ট্রেচিং) মাধ্যমে পেশীগুলোকে নরম রাখা হয় এবং এই খিঁচুনির সমস্যা কমানো হয়।
- হাঁটাচলার প্রশিক্ষণ: যারা আবার হাঁটতে পারবেন, তাদের জন্য হাঁটাচলার প্রশিক্ষণ খুব জরুরি। এই প্রশিক্ষণে প্যারালাল বার (দুই পাশে হাতল লাগানো লোহার দণ্ড), ওয়াকার (চার চাকার যন্ত্র), ক্রাচ (বগলের নিচে নিয়ে হাঁটার লাঠি) এবং প্রয়োজনে বিশেষ জুতো বা সাপোর্ট (অর্থোসিস) ব্যবহার করে রোগীকে ঠিকমতো হাঁটতে শেখানো হয় এবং শরীরের ভারসাম্য ঠিক করা হয়।
- প্যারালাইসিস হলে পুনর্বাসন: যদি সম্পূর্ণ প্যারালাইসিস হয়, তাহলে আঘাত লাগার পর পরই ফিজিওথেরাপি শুরু হয়। এখানে রোগীকে বোঝানো হয় কীভাবে অবশ হাত-পা বা শরীরের অংশগুলোকে সুস্থ অংশগুলোর সাহায্যে ব্যবহার করা যায়। রোগীকে তার অনুভূতি এবং মাংসপেশির কাজ করার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল শেখানো হয়। এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অনেক দিন ধরে চলতে পারে।
- সহায়ক যন্ত্র ব্যবহার: ফিজিওথেরাপিস্টরা রোগীকে হুইলচেয়ার, ওয়াকার, ক্রাচ বা অন্যান্য সহায়ক যন্ত্রের সঠিক ব্যবহার শিখিয়ে দেন। এই যন্ত্রগুলো রোগীদের চলাফেরা করতে এবং নিজের কাজ নিজে করতে সাহায্য করে।
- ভারসাম্য ও সমন্বয়ের প্রশিক্ষণ: মেরুদণ্ডে আঘাত লাগলে প্রায়ই শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং হাত-পায়ের কাজ ঠিকমতো সমন্বয় করে করা যায় না। ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে রোগীর ভারসাম্য উন্নত করা হয় এবং বিভিন্ন কাজ করার সময় হাত-পায়ের সঠিক সমন্বয় শেখানো হয়।
উপসংহার
ফিজিওথেরাপি শুধু শরীরকে সুস্থ করে না, মনের ওপরও এর অনেক ভালো প্রভাব পড়ে। মেরুদণ্ডের আঘাতের পর রোগী মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারে। নিয়মিত ফিজিওথেরাপি করলে রোগী যখন দেখে যে সে আবার একটু একটু করে সুস্থ হচ্ছে, তখন তার মনে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে। যখন একজন রোগী বুঝতে পারে যে সে নিজের শরীরের ওপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাচ্ছে এবং দৈনন্দিন কাজগুলো করতে পারছে, তখন তার মন ভালো হয়। ফিজিওথেরাপিস্টরা রোগীদের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক তৈরি করেন, যা তাদের মানসিক শক্তি জোগায় এবং এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
ফিজিওথেরাপি হলো স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির রোগীদের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এটি শুধু শরীরকে সুস্থ করে না, বরং রোগীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তাদের আবার স্বাভাবিক ও সক্রিয় জীবনে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। আপনার বা আপনার পরিচিত কারো যদি এই ধরনের আঘাত লেগে থাকে, তাহলে একজন ভালো ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে কথা বলা খুবই জরুরি।