সায়াটিকা

সায়াটিকা কি?

সায়াটিক স্নায়ু  আমাদের শরীরের সবচেয়ে দীর্ঘ এবং মোটা নার্ভ। আমাদের মেরুদন্ডের লাম্বার  ও স্যাক্রাম কশেরুকা থেকে কিছু স্নায়ুর বান্ডেল বের হয় যেগুলো শরীরের দুই পাশের কোমর থেকে শুরু করে পায়ের পিছন দিক দিয়ে হাঁটুর নিচে পর্যন্ত যায়। এই সায়াটিক স্নায়ুতে কোনো কারনে চাপ পড়লে তাহলে যে ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি হয় সেটিকেই আমরা সায়াটিকা বলি। সায়াটিক নার্ভের সংকোচনের কারনেও এই ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।

কারনঃ

সায়াটিকার  সাধারণ কারনগুলোর মধ্যে একটি কারন হলো ডিস্ক হার্নিয়েশন যার ফলে সায়াটিক স্নায়ুর উপরে চাপ সৃষ্টি হয়।
দুটি ভার্টেবরার মাঝে ডিস্কের মধ্যে যে জেলির মতো নরম অংশ থাকে সেটি যখন বের হয়ে পাশে থাকা নার্ভে চাপ দেয় তাখন সায়াটিকা হয়। এই ব্যথা পায়ের দিকে চলে আসে।

অন্যান্য কারনগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

১) কোমড়ের হাড় বেড়ে গিয়ে নার্ভে চাপ পড়া।
২) আঘাতজনিত কারনে নার্ভে চাপ।
৩) মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গেলে (স্কোলিওসিস) নার্ভের ওপর চাপ পড়ে।
৪) কোমর বা নার্ভের পাশে কোথাও টিউমার হলে।
৫) স্পন্ডাইলোলিসথেসিস বা মেরুদন্ডের একটা হাড় আরেকটির উপর সরে গেলে।
৬) গর্ভবর্তী মহিলাদের অনেক সময়  এই ধরনের ব্যথা হতে পারে।
৭) স্থূলতা।
৮) পাইরিফরমিস  সিনড্রোম।
৯) ভুল দেহভঙ্গি।
১০) লাম্বার স্পাইনাল স্টেনোসিস বা সুষুম্মা সংকীর্ণতা।
১১) এন্ডোমেট্রিওসিস।
১২) ক্যান্সার।
১৩) কডাইকুনা সিন্ড্রোম।

  •  গবেষনায় দেখা গেছে 1-40% এরও কম লোকের কখনও না কখ
    নও সায়াটিকা থাকে।
  •  ৪৫-৬৫ বছর বয়সের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
  • পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হয়।

উপসর্গ-

  • পিঠের নিচের অংশে, কোমড়, নিতম্বের হাড়, পায়ের পিছনে ব্যথা।
  • বাটক বা  নিতম্বের মাংসল অংশে ব্যথার অনুভূতি।
  • পায়ের পিছন দিকে জ্বালাপোড়া ও অসাড়তার সৃষ্টি।
  •  পায়ের পাতায় ঝিঁঝি ও অসাড়তা
  •  এক পায়ে , মাঝে মাঝে দুই পায়েই দুর্বলতা দেখা দেওয়া।
  • দাড়িয়ে থাকা ও হাঁটতে গেলে অসুবিধা ও অসাড় হয়ে আসা
  •  দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতেও সমস্যা হওয়া।
  • মূত্রত্যাগ ও মলত্যাগে নিয়ন্ত্রণ না থাকা

ব্যথার ধরনঃ

খোঁচা খোঁচা ব্যথা বা শুটিং পেইন এর সাথে  জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয় যা কোমড় থেকে পায়ের পিছন দিক হয়ে পায়ের পাতায় চলে যায় ।

 

চিকিৎসাঃ

মূলত সায়াটিকা হলে  ব্যথানাশক ঔষুধ দিতে হয় যার সমাধান স্থায়ী নয় কিন্তু অত্যাধুনিক ও বিশেষ ফিজিওথেরাপী চিকিৎসার মাধ্যমে সায়াটিকা  স্থায়ীভাবে নির্মূল করা সম্ভব।
⇒ আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, ইনফ্রা-রে ব্যথা নিরামরে  যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।
⇒ নির্দিষ্ট কিছু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ সায়াটিক নার্ভের উপর চাপ কমিয়ে ব্যথা নিরাময় করে।
→ আকুপাংচার বা ড্রাই নিডেলিং ও ব্যথা নিরাময়ে দ্রুত সাহায্য করে। আরো রয়েছে – এনএমইএস।
⇒ টেন্স সহ আরো অত্যাধুনিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা।