আমাদের অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি

ফ্রী ডাক্তারে পরামর্শ নিতে কল করুন

আকুপাংচার কী?

আকুপাংচার হলো একটি প্রাচীন চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে শরীরের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় খুব সরু সুঁচ ঢুকিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এটি ব্যথা কমানো, বিভিন্ন রোগের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং শরীরের নিজস্ব নিরাময় ক্ষমতাকে উদ্দীপিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত শরীরের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার একটি পদ্ধতি।

আকুপাংচার কিভাবে কাজ করে?

আকুপাংচারের মূল ধারণা হলো, আমাদের শরীরে “চি” (Qi) নামের এক ধরনের জীবনীশক্তি প্রবাহিত হয়। এই শক্তি কিছু নির্দিষ্ট পথ বা “মেরিডিয়ানের” (Meridians) মাধ্যমে চলাচল করে। যখন এই “চি” প্রবাহে কোনো বাধা আসে বা ভারসাম্য নষ্ট হয়, তখনই আমরা অসুস্থ হই বা ব্যথা অনুভব করি।

আকুপাংচারিস্টরা শরীরের নির্দিষ্ট আকুপাংচার পয়েন্টে (Acupuncture points) সরু সুঁচ ঢুকিয়ে এই “চি” প্রবাহকে ঠিক করার চেষ্টা করেন। এর ফলে:

  • ব্যথা কমে: সুঁচ ঢোকানোর ফলে শরীর প্রাকৃতিক ব্যথানাশক পদার্থ (যেমন এন্ডোরফিন) তৈরি করে, যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • রক্ত চলাচল বাড়ে: এটি নির্দিষ্ট স্থানে রক্ত চলাচল বাড়ায়, যা নিরাময় প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে।
  • প্রদাহ কমে: শরীরের ভেতরের ফোলা বা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
  • স্নায়ুতন্ত্র শান্ত হয়: এটি স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং অনিদ্রা কমাতে সাহায্য করে।
  • শরীরের নিজস্ব নিরাময় ক্ষমতা বাড়ে: এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং শরীরকে নিজেই সুস্থ হতে সাহায্য করে।

আকুপাংচার প্রধানত যেসব সমস্যায় খুব কার্যকরী

  • বিভিন্ন ধরনের ব্যথা যেমন কোমর, ঘাড় ও পিঠের ব্যথা, মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেন, জয়েন্টের ব্যথা (হাঁটু, কাঁধ, বাত), এবং দাঁত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • বমি বমি ভাব ও বমি: কেমোথেরাপি বা অপারেশনের পর হওয়া বমি ভাব বা বমি কমাতে। গর্ভাবস্থায় সকালে বমি বমি ভাব (মর্নিং সিকনেস) কমাতেও সাহায্য করে।
  • মানসিক সমস্যা: উদ্বেগ, বিষণ্ণতা এবং অনিদ্রা (ঘুম না আসা) কমাতে সাহায্য করে।
  • অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্ট: অ্যালার্জিক রাইনাইটিস (নাক বন্ধ, হাঁচি) বা হালকা শ্বাসকষ্টে আরাম দিতে পারে।
  • হজমজনিত সমস্যা: কিছু হজম সংক্রান্ত সমস্যা, যেমন আইবিএস (IBS) এর লক্ষণ কমাতে।
  • ক্যান্সার চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কেমোথেরাপির কারণে হওয়া ক্লান্তি ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • স্ট্রোকের পর সুস্থ হওয়া: স্ট্রোকের পর শারীরিক কার্যক্ষমতা ফিরে পেতে কিছু ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হতে পারে।

আকুপাংচারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা

  • আকুপাংচারে ওষুধ বা অপারেশনের মতো মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারণত এতে হয় না, কারণ এটি প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে সুস্থ হতে সাহায্য করে। সুঁচগুলো খুব সরু হওয়ায় ব্যথাও তেমন লাগে না।
  • আকুপাংচার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কমানোর জন্য একটি নিরাপদ এবং কার্যকর পদ্ধতি।
  • আকুপাংচার শরীরের নিজস্ব নিরাময় ক্ষমতাকে উন্নত করে, যার ফলে শরীর নিজেই ধীরে ধীরে সুস্থ হতে পারে।
  • আকুপাংচার শুধু শারীরিক ব্যথা কমায় না, বরং মানসিক চাপ কমিয়ে শরীর ও মনকে শান্ত রাখতেও সাহায্য করে।
  • অনেক ক্ষেত্রে আকুপাংচার সফলভাবে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ফলে ব্যথানাশক ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমে যায়।
  • এই পদ্ধতি শুধু একটি নির্দিষ্ট রোগ বা লক্ষণ নয়, বরং পুরো শরীরের ভারসাম্য এবং সামগ্রিক সুস্থতার ওপর জোর দেয়।
  • অন্যান্য প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি এটি সহজে ব্যবহার করা যায় এবং অনেক সময় তাদের কার্যকারিতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

সাধারণ জিজ্ঞাসা / FAQ

আপনার প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

উত্তর: না, বেশিরভাগ সময় ব্যথা লাগে না। সূচ খুবই চিকন হয়, তাই শুধু হালকা একটা চিমটি লাগার মতো অনুভূতি হতে পারে।

উত্তর: কিছু রোগে একবারেই আরাম পাওয়া যায়, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৪-৬টি সেশন প্রয়োজন হয় ভালো ফলাফলের জন্য।

উত্তর: গর্ভবতী মহিলা, রক্তপাতজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, বা যাদের ব্লাড প্রেসার খুব কম — তাদের ক্ষেত্রে আগে থেরাপিস্টের পরামর্শ নেয়া উচিত।

উত্তর: হ্যাঁ, অভিজ্ঞ থেরাপিস্ট দিয়ে করলে এটা পুরোপুরি নিরাপদ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না।

Scroll to Top